যেকোনো কিছু শুরু করা কিন্তু অনেক কঠিন । আপনি শুধু একা না, পৃথিবীর যে কেউ যখন কোন ব্যবসা বা তার পেশা শুরু করেছে, শুরুর দিকে সবসময় এটা কঠিন হয় । এই কঠিন সময়টা যদি পার করতে না পারেন, ডেডিকেটেড না হন এবং যে কাজটা আপনি করতেছেন তা করতে চাচ্ছেন তার প্রতি যদি আপনার কোন প্যাশন না থাকে, তাহলে আপনার সফলতার হার টা খুবই কম । পৃথিবীর যে কোন পেশায় আপনি যদি সফল হতে চান, তবে চারটা জিনিস আমার মতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ –
- এক নাম্বার হচ্ছেঃ কাজটার প্রতি আপনার ভালোবাসা থাকতে হবে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
- দুই নাম্বার বিষয় হচ্ছেঃ আপনি যে কাজটা করবেন সেটাতে আপনার দক্ষ হতে হবে । দক্ষতা ছাড়া আপনার কোন ভ্যালু নাই ।
- তিন নাম্বার – ধৈর্য, ধৈর্য ব্যতীত পৃথিবীর কেউ সফল হতে পারেনি, আপনিও পারবেন না ।
- আর সর্বশেষে আমি বলব, আপনাকে ডেডিকেটেড এবং প্রফেশনাল এই কোয়ালিটির অধিকারী হতে হবে ।
আপনি কেন কাজ পাচ্ছেন না?
এখন প্রথম প্রশ্নে আসি, আপনি কেন কাজ পাচ্ছেন না? মিলিয়ে দেখুনতো নিচের কাজগুলো আপনি করেন কিনা, যদি এর কোনটা আপনার মধ্যে থাকে, তবে ধরে নিতে হবে এই কারণে আপনি কাজ পাচ্ছেন না ।
- আপনি কি কাজ করবেন এ সম্পর্কে আপনার কোন ধারনা নেই
- আপনি জানেন না আপনি কোন বিষয়ে ন্যাচারালি দক্ষ বা ট্যালেন্টেড
- আপনি ফ্রিল্যান্সিং এসেছে শুধু টাকার লোভে, মনের ভিতর থেকে আপনার কোন আগ্রহ নাই
- সব ধরনের কাজ আপনি পারেন বলে মনে করেন এবং সব ধরনের কাজের জন্য আপনি বিড করেন
- আপনি যে কাজটা করতে চাচ্ছেন সে কাজটা সম্পর্কে আপনার কোন ট্রেনিং নাই বা প্রফেশনাল লেভেলের দক্ষতা আপনি অর্জন করতে পারেন নাই এখনও
- একটা বিশেষ বিষয়ের প্রতি আপনি ফোকাস না । একেক সময় একেক কিছু করার চেষ্টা করতেছেন, যার ফলে কোনোটাতেই আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারছেন না
- আপনার ধৈর্যের প্রকট অভাব আছে, খুব দ্রুত সফলতা পাওয়ার চেষ্টা করছেন যেটা কখনোই সম্ভব না
- এর আগে যদি আপনি কোন কাজ করে থাকেন – সেটা মনোযোগ দিয়ে করেননি । ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বা চিটিং করেছেন
- আপনি ফ্রিল্যান্সিং কে ব্যবসা হিসেবে নিতে পারেন নি
- আপনার এই পেশার ওপর ইনভেস্টমেন্টের পরিমাণ জিরো, একটা জিনিস মনে রাখবেন অনেক কিছু পেতে গেলে অন্তত কিছু দিতে হয়
- অন্যের কাজ কপি পেস্ট করে আপনি চালাতে অভ্যস্ত
আমি কাজ তাহলে কি করলে পাবো?
তাহলে দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, ভাই আমি কাজ তাহলে কি করলে পাবো?
আমি সংক্ষেপে উত্তর দিব – আমি উপরে যে পয়েন্টগুলো বললাম যদি আপনার এগুলোর কোন কিছু থেকে থাকে প্রথমত এগুলো বাদ দেন । এবার নিচের পয়েন্ট গুলো ফলো করুন আশা করি আপনার জন্য হেল্পফুল হবে ।
কিভাবে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী হবে?
- একটা নির্দিষ্ট বিষয় ফোকাস করে আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করেন, চেষ্টা করেন নিজের মনে নিজেই প্রশ্ন করতে, আপনি কোন বিষয়টাতে আগ্রহী, কোনটা করতে আপনার ভালো লাগে, কোনটাতে আপনি ন্যাচারালি দক্ষ । হতে পারে সেটা ডাটাএন্ট্রি, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়ার্ডপ্রেস ডেভলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ট্রানসলেশন সার্ভিস । এটা গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপনি একসাথে দু-তিনটা কাজ শুরুতে কখনোই করবেন না । একটা বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করুন, তাতে আপনার সেই বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের সম্ভাবনা অনেক বেশি হবে ।
- ওকে, এখন ধরে নিলাম আপনি কি বিষয়ে কাজ করবেন এটা আপনি জানেন এবং সেটাতে আপনি মোটামুটি লেভেলের দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং আপনার অন্যকে সার্ভিস দেওয়ার মতো মেন্টাল প্রিপারেশন আছে । ক্লায়েন্টদের জন্য যখন কাজ করবেন আপনার মতে কিছু গুণাবলী অব্যশই থাকা উচিত । এক নম্বর হচ্ছে – আপনার কমিউনিকেশন লেভেল খুবই ভালো হতে হবে । আপনি যে কাজটা নিবেন, সে কাজটা আপনার টোটালি বুঝে নিতে হবে এবং ভালোভাবে কাজটা সম্পন্ন করে সঠিক টাইমের মধ্যে ডেলিভারি দিতে হবে, কখনোই দেরি করে কাজ করবেন না ।
- এখন আপনি ফাইভার বা আপওয়ার্ক, যেটা আপনার ভালো লাগে আমার মতে ফাইভার বেস্ট, সেখানে অন্য কারো গিগ না দেখে (কোন কপি পেস্ট, এই কাজটা করবেন না) নিজের মতো করে একটা গিগ তৈরি করুন । এই গিগ কতটা ভালোভাবে তৈরি করছেন, এর উপর আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকখানি নির্ভর করবে । আমি অনেকদিন ধরে গিগ এর উপর একটা ব্লগ লেখার চেষ্টা করতেছি, সময় হচ্ছে না, আশা করি খুব দ্রুতই দিতে পারব । সংক্ষেপে যেটা বলবো – আপনার টাইটেল টা যেনো ইউনিক হয় এবং সেটাতে যেন সার্চ আসে অর্থাৎ কিওয়ার্ডের ট্রাফিক যেন ভালো থাকে, এটা মাথায় রাখে গিগের টাইটেল নির্ধারণ করবেন । কভার ফটো জাস্ট অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে কখনোই দেবেন না । নিজের মতো করে চেষ্টা করুন ভালো একটা কভার ফটো দিতে । তৃতীয় যে বিষয়টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটা হচ্ছে আপনার গিগের ডিসক্রিপশন । ব্যাকরণগত কোন ভুল না করে ইংলিশে আপনার গিগের ডিসক্রিপশন টা ভালোভাবে লিখুন, শেষের দিকে একটা প্যারাগ্রাফ সবসময় লিখবেন, কাজ দেওয়ার আগে তারা যেন আপনাকে মেসেজ করে ।
- অলরাইট, আপনি এখন কাজ পাওয়ার জন্য রেডি । আপাতত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন কাজ নাই । এর মাঝে আরো দুই একটা ভালো গিগ তৈরি করুন, একই বিষয় নিয়ে হতে পারে, তবে কোন ভাবেই আপনার একটা গিগ যেনো অন্য একটা গিগের কপি-পেস্ট না হয় ।
- এরপরের স্টেপ হচ্ছে, যখনই আপনি কোন মেসেজ পাবেন সাথে সাথে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন, গুছিয়ে উত্তর দেবেন । আপনার কমিউনিকেশন দক্ষতা নির্ধারণ করবে আপনি কত দ্রুত কাজ পাবেন । শুরুতেই কাজ পাবেন এটা আশা করেন না । ধরে থাকেন, যখনই কোনো কাজ পাবেন আপনার ১০০% দিয়ে কাজটা করুন, ভুল করবেন না এবং প্রথম ১০/১৫ টা কাজ যদি আপনি ভালভাবে ডেলিভারি দিতে পারেন, ৫ স্টার রেটিং পান, আপনার পিছনে তাকানোর সম্ভাবনা খুবই কম । মনে রাখবেন ভালো কাজটা সব সময় দিতে হবে এবং ফাঁকি দিলেন তো ব্যবসা থেকে ছিটকে গেলেন ।
এখন মনে হতে পারে, এগুলোতো আমি জানি, আমি ভাবছিলাম আপনি গোপন কোনো রহস্যের কথা বলবেন যেটা শোনার সাথে সাথে আমি নতুন কাজ পেয়ে যাব!! যদি এটা আপনার মনে হয় আপনি এখনো ভুল রাস্তায় আছেন । সফলতা অর্জনের গোপন কোন পথ নাই, পথগুলো সবাই জানে কিন্তু খুব কম লোকই সেটা ফলো করতে পারে । কারণ অনেকে আপনার মত শর্টকাটে বড়লোক হওয়ার চেষ্টা করে যেটা কখনোই পৃথিবীতে সম্ভব না । আপনি ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার বা অন্য যেকোনো ব্যবসার কথা বলুন, কোচিং ব্যবসায়িরা আপনাকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছে, সেটা বাস্তব না । বাস্তবে সফলতা অর্জন করা একটু কঠিন কিন্তু অসম্ভব না । ধৈর্য ধরে কাজ করুন, আশা করি সফলতা পাবেন । আর যদি দুই দিন পর একটার পর আরেকটা ট্রাই করেন, তাহলে কোন কাজেই সফলতা পাবেন না ।